December 22, 2024, 4:07 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার দ্রত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
‘রায়ে আমি সন্তুষ্ট। তবে আমি সব খুনির ফাঁসি চেয়েছিলাম। আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই এটা আমি বলছি,’ রায় ঘোষণার পর পরই এমন প্রতিক্রিয়া জানান আবরার ফাহাদের মা রোকেয়া খাতুন।
আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রোকেয়া খাতুন দ্য ডেইলি স্টারকে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমি তো ২৫ জনেরই ফাঁসি চেয়েছিলাম।’
তিনি সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অমিত সাহার নাম উল্লেখ করে রোকেয়া খাতুন আরও বলেন, ‘সেই তো সবকিছুর সঙ্গে ছিল। আমি অমিতেরও ফাঁসি চাই।’
‘রায়ে আমি সন্তুষ্ট। তবে আমি সব খুনির ফাঁসি চেয়েছিলাম। আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই এটা আমি বলছি,’ রায় ঘোষণার পর পরই এমন প্রতিক্রিয়া জানান আবরার ফাহাদের মা রোকেয়া খাতুন।
তিনি বলেন, ‘আমি তো ২৫ জনেরই ফাঁসি চেয়েছিলাম।’ সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অমিত সাহার নাম উল্লেখ করে রোকেয়া খাতুন আরও বলেন, ‘সেই তো সবকিছুর সঙ্গে ছিল। আমি অমিতেরও ফাঁসি চাই।’
আজ ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান রায়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার ২০ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহতাসিম ফুয়াদ, সাবেক গ্রন্থাগার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ মুন্না, সাবেক আইন বিষয় উপসম্পাদক অমিত সাহা, সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী আকাশ হোসেন ও মোয়াজ আবু হুয়ারেরা।
একইসঙ্গে আদালত তাদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল ওরফে শান্ত, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক অনিক সরকার অপু, সাবেক সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, সাবেক ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, সাবেক সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপসম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, সাবেক উপদপ্তর সম্পাদক মুস্তবা রাফিদ এবং সদস্য মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, মুনতাসির আল জেমি এবং ইহতাশামুল রাব্বী তানিম।
এ ছাড়া, ছাত্রলীগ কর্মী খন্দকার তাবাক্কারুল ইসলাম তানভীর, এএসএম নাজমুস সাদাত, মাজেদুর রহমান ওরফে মাজেদ, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, শামীম বিল্লাহ, মুহাম্মদ মোরশেদ-উজ-জামান মণ্ডল ওরফে জিসান, মোরশেদ অমর্ত্য ইসলাম, মিজানুর রহমান মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত ও এসএম মাহমুদ সেতুকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
তাদের মধ্যে জিসান, তানিম ও মুস্তবা রাফিদ পলাতক।এর আগে রায় ঘোষণার নির্ধারিত দিনে সকাল সোয়া ৯টার পর কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার এ মামলার ২২ আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
গত ১৪ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের তারিখ ২৮ নভেম্বর ধার্য করেন। কিন্তু ওই দিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় তা পিছিয়ে ৮ ডিসেম্বর ধার্য করেন আদালত।
এর আগে গত ২৮ নভেম্বর রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল। তবে রায় প্রস্তুত না হওয়ায় বিচারক ৮ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন।
আবরারের বাবা বরকত উল্লাহর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান তিনি ঢাকায় রয়েছেন। রায় শুনতে সকালে আদালতে যাবেন।
তিনি বলেন আইনের প্রতি তার পরিবারের আস্থা রয়েছে।
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন চুক্তির সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার জেরে আবরার ফাহাদকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। ওই দিনগত রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের দোতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি।
আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান।
অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৯ জন ও তদন্তে প্রাপ্ত আরও ছয়জন। এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৭ জন ও এজাহার-বহির্ভূত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আটজন।
২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। মামলায় মোট ৬০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।
Leave a Reply